লাউ শাকের ৭ টি উপকারিতা এবং ৬ টি অপকারিতা-লাউ শাকের পুষ্টিগুণ
পুষ্টিগুণে ভরা সবজির মধ্যে লাউ অন্যতম একটি খাবার, লাউ এ রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন বি, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি। এছাড়াও লাউ এ রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস এবং ম্যাগনেসিয়াম এর মত প্রচুর পরিমাণে
পুষ্টি উপাদান।
এছাড়াও লাউ ফোলেট, আয়রন ও পটাশিয়ামের মত গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুষ্টি উপাদান
যেগুলো মানব দেহের জন্য অত্যন্ত কার্যকারী একটি ঔষধ বলা যায়। আজ আমি আপনাদেরকে
লাউ এবং লাউ শাক খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব।
পেইজ সুচিপত্রঃ লাউ শাকের ৭ টি উপকারিতা এবং ৬ টি অপকারিতা-লাউ শাকের পুষ্টিগুণ
- লাউ এর উপকারিতা
- লাউ শাকের পুষ্টিগুণ
- লাউ এর রসের উপকার
- লাউ চাষ করার পদ্ধতি
- লাউ শাক রান্নার রেসিপি
- লাউ শাকের উপকারিতা
- লাউ শাকের অপকারিতা
- উপসংহারঃ লাউ শাকের ৭ টি উপকারিতা এবং ৬ টি অপকারিতা-লাউ শাকের পুষ্টিগুণ
লাউ এর উপকারিতা
পুষ্টিগুনে ভরা সবজি লাউ। লাউ এ বিদ্যমান রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
সি, ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ডি যেগুলো আমাদের সকলের জন্য পুষ্টির অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। এছাড়াও লাউ এ বিদ্যমান রয়েছে সোডিয়াম,
ক্যালসিয়া্ ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস। পটাশিয়াম এবং আইরনের চমৎকার একটি
উৎসব লাউ। তাই নানা ধরনের অসুখ থেকে দূরে থাকতে চাইলে লাউ খাওয়ার কোন
বিকল্প নেই। এছাড়াও লাউ ডায়েট এবং স্কিন এর জন্য উপকারী একটি খাবার।
লাউয়ের ৯৬ শতাংশ পানি হওয়ার কারণে এটি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর অত্যন্ত
ঠান্ডা অনুভব হয় এবং লাউ খেলে শরীরে হাইড্রেট থাকে। তাই এই গরমে লাউ
খাওয়ার কোন বিকল্প নেই। এবং লাউ খেলে হজমের কোন সমস্যা হয় না বলে যে কোন
ব্যক্তি লাউ খেতে পারবে এবং এটি অত্যন্ত হালকা একটি খাবার। লাউ এ
রয়েছে লো ক্যালোরি এবং উচ্চমাত্রায় আঁশ যার ফলে এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই যারা ওজন নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছেন তারা
নিশ্চিন্তে লাউ খেতে পারেন।
এছাড়াও যাদের বিভিন্ন অসুস্থতার কারণে হজমের সমস্যা আছে তারা লাউ খেতে
পারেন। কারণ আস কোষ্ঠকাঠিন্য পেট ফাঁপা এ সকল সমস্যা প্রতিরোধ করতে
সাহায্য করে লাউ। যারা কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা এবং বিভিন্ন রকম হজমের
সমস্যা নিয়ে ভুগছেন লাউ হতে পারে তাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি
খাবার। কারণ লাউ অত্যন্ত পাতলা একটি খাবার হওয়ার কারণে এটি হজম করতে কোন
সমস্যা হয় না এবং এটি কোষ্ঠকাঠিন্যর রোগ দূর করে।
এছাড়াও এটি মানব শরীরে কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটায়। লাউ আপনার শরীরের
উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা কমিয়ে দেয়, লাউ এ থাকা ফাইভার এবং
পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে রাখে এর পাশাপাশি লাউ হৃদ রোগীদের
ঝুঁকি কমাতে সহযোগিতা করে। এছাড়াও লাউয়ের থাকা বিভিন্ন ভিটামিন এবং
মিনারেল এবং উচ্চমাত্রায় পানি আমাদের ত্বক ও চুল সুস্থ
রাখে, তাই যারা ত্বক সচেতন মানুষ তাদের জন্য লাউ হতে পারে অনেক
উপকারী একটি খাবার।
লাউ এর ভিতরে থাকা ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস যা শরীরে ঘামচি জনিত বা ঘাম জনিত
লবণের ঘাটতি দূর করে দেয় এবং এর পাশাপাশি দাঁত এবং হাড় কে মজবুত এবং
শক্তিশালী করে এবং শরীরকে রাখে সতেজ এবং ঠান্ডা। কিছু কিছু গবেষকরা গবেষণার
দাবি করেছে রাতে ঘুম হওয়ার সমস্যা যাদের আছে তাদের রাতের ঘুম সমস্যা দূর
করতে বিরাট ভূমিকা পালন করে। যাদের রাতে ঘুম হয় না তারা অবশ্যই লাউ খেয়ে
দেখতে পারেন।
লাউ শাকের পুষ্টিগুণ
লাউ শাকের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জেনে নি, আমরা আমাদের বাসার আশেপাশে ঘরের চালে এবং উঠোনে অথবা জমিতে লাউ এর গাছ দেখতে পায়, লাউ শাক আমাদের দেশে অত্যান্ত জনপ্রিয় একটি খাবার লাউ শাক পছন্দ করেনা এরকম মানুষ পাওয়া খুব কঠিন বিশেষ করে যারা বাঙালি তাদের প্রায় সকলেই লাউ শাক খেতে খেতে খুব পছন্দ করে থাকেন। দেখতে খুব সহজ সরল মনে হলেও এটার উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ কিন্তু অনেক বেশি, লাউ শাক যে আমাদের শরীর এবং স্বাস্থ্যের উন্নয়ন করতে কতটুকু অপরিসীম ভূমিকা পালন করে চলুন সেটা জেনে নেই।
লাউ শাক একটি ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার হওয়ার কারণে গর্ভস্থ শিশুর
পাইলার কার্ড এবং মস্তিষ্ককে বৃদ্ধি করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক
এসি ড যুক্ত খাবার গ্রহণ করা খুব প্রয়োজন। কারণ ফলিক এসিডের অভাবে গর্ভস্থ
শিশুর পায়লার কার্ড এর বৃদ্ধি ব্যাহত হয় যার কারণে প্যারালাইসিস,
মস্তিষ্ক বিকৃত অথবা মৃত সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই
গর্ভস্থ মায়েদের জন্য লাউ শাক খাওয়া অত্যন্ত জরুরী।
এছাড়াও লাউ শাক উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং ঠান্ডা যেকোনো
ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহযোগিতা করে থাকে।
লাউ শাক মস্তিষ্ককে ঠান্ডা করে রাখে এবং ঘুমের সকল
সমস্যা দূরকরতে সাহায্য করে থাকে এবং লাউ শাক শরীরের
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম এটি শরীরকে ঠান্ডা
রাখে। এই অতিষ্ঠ গরমে লাউশাক হতে পারে আপনার অন্যতম একটি
পছন্দের খাবার। লাউ শাক একটি ফাইবার বা আর্স যুক্ত খাবার হওয়ার কারণে এটি
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করতে সাহায্য করতে পারে এবং তার সাথে সাথে এটি পাইলস
সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করে থাকে। যাদের পাইলস এর সমস্যা আছে তারা
অবশ্যই লাউ শাক নিয়মিত খাবেন পাইলসের জন্য এটি অন্যতম একটি ঔষধ হিসেবে কাজ
করে।
লাউ শাকে থাকা বিটা ক্যারোটিন, লুটে ইন ও জিএ জেথিন এ পরিপূর্ণ
একটি খাবার। বিটা ক্যারোটিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং
শক্তিশালী করে লুটেইন এবং জিয়ে জেঠিন চোখের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও অল্প বয়সে চোখের সমস্যা এ সকল সমস্যা যাদের
আছে লাউশাক নিয়মিত খেলে চোখের সমস্যা দূর হতে পারে। এবং এটি চোখের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও লাউশাকে প্রচুর পরিমাণে
ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় যা হাড়ের ক্ষয়ক্ষতি দূর করে
হারকে শক্ত এবং মজবুত করে তোলে এবং ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগের
ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
লাউ শাক কোলেস্টেরল, ক্যালোরি এবং ফ্যাট মুক্ত হওয়ার কারণে ওজন
কমানোর জন্য লাউ শাক হতে পারে আদর্শ একটি খাবার। এটি ওজন কমাতে সাহায্য
করে, যারা ডায়েট করেন তাদের জন্য লাউশাক হতে পারে আদর্শ একটি খবর। এছাড়াও
লাউ শাক পটাশিয়াম সমৃদ্ধ একটি খাবার হওয়ার কারণে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে
কারণ পটাশিয়াম এর স্পন্দন এগুলো স্বাভাবিক রাখার জন্য পটাশিয়াম
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। যার জন্য মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকে এবং এটি
আমাদের শরীরকে ও ঠান্ডা এবং সতেজ রাখে। এছাড়াও লাউ শাক আয়রন
সমৃদ্ধ একটি খাবার যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ও লোহিত রক্তকণিকার
সংখ্যা বাড়িয়ে রক্ত তৈরি করতে সহযোগিতা করে।
লাউ এর রসের উপকারিতা
লাউ এর রসের উপকারিতা আমরা অনেকেই জানিনা চলুন জেনে নেই। সবজি হিসেবে লাউকে
আমরা অনেকে খুব পছন্দ করি আবার অনেকে পছন্দ করি না। তবে এর গুনাগুন এবং
উপকারগুলো জানলে কিন্তু লাউ এখন থেকে সবজি হিসেবে খুব বেশি করে খাইতে
চাইবেন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে লাউ সেদ্ধ করে লাউ এর রস খেতে পারলে
এটি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে রাখে এবং পেট
ঠান্ডা রাখে এবং ভুরি রোধ করে। তাই যারা অতিরিক্ত ওজন এবং ভুড়ি সমস্যায়
ভুগছেন তারা লাভ এর রস খেতে পারেন।
বিভিন্ন গবেষণায় পুষ্টিবিদরা বলেছেন শুধু শরীর নয়, ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা
দূর করতেও সহযোগিতা করে এই সবজি। লাউয়ের রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন
সি দ্বারা ভরপুর যা আমাদের ত্বকের বালি রেখা শুষ্কতা ও কুঞ্চন কমাতে
সহযোগিতা করে। ভিটামিন সি তে অ্যান্টির অক্সিডেন্ট এর উপাদান রয়েছে
যা মানসিক চাপ দুশ্চিন্তা দূর করে এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার
কারণে যে অক্সিডেটিভ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি
আপনার ত্বকের গঠন কাঠামো সঠিক রাখতে পারে প্রোটিন বা কোলাজেনের সংশ্লেষণ ের
ক্ষেত্রে ভিটামিন সি খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
লাউ এর রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার জন্য এটা দৈনিক ভিটামিন সি এর
প্রয়োজনীয়তা দ্রুত মিটিয়ে দেয় এবং ত্বক ঝুলে যাওয়া বলিরেখার
ঝুঁকি কমিয়ে আনে। আপনি চাইলে মুখের উপরে লাউয়ের রস লাগাতে পারবেন এতে করে
আপনার ত্বকের উপরে ভিটামিন সি এর প্রয়োজন মিটিয়ে দিবে এবং আপনার
ত্বককে করে তুলবে আগের থেকে সুন্দর এবং মসৃণ। এছাড়াও লাউয়ের রস ওজন
কমাতে সক্ষম বলে অনেকে ধারণা করে থাকে। তবে দুর্ভাগ্যবশত এ বিষয়ে কোন
রকম প্রমাণ সাপেক্ষে সেরকম কোন গবেষণায় করা হয়নি। তবুও লাউয়ের কিছু
বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। চলুন সে
বিষয় সম্পর্কে জেনে নি।
প্রথমত এতে কোন চর্বি নেই এবং জলীয় উপাদান খুব বেশি থাকায় এটি আপনার কম
নেহ পদার্থ যুক্ত খাবার এরোপের করবে না যখন আপনি খাবারে স্নেহ পদার্থ
কম করতে চাইবেন তখন এটি তাতে কোন চর্বিযোগ করেনা। এবং দ্বিতীয়তঃ এটি একটি
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার হওয়ার কারণে এটি শরীরে সার্বিক নেহ পদার্থ কম করে
ওজন কমাতে সহযোগিতা করে। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে শথু লত্তের এবং শরীরে ফুল
হয়ে যাওয়া পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অন্যতম একটি কারণ হতে পারে ফ্রি
রেডিক্যাল বেড়ে যাওয়া ও অক্সিডেন্ট চাপ বৃদ্ধি পাই। কিন্তু এই
পানিতে যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উপস্থিতি থাকে তা এই ফ্রী রেডিক্যাল
ব্রান করে দেয়। এবং এটি মূলত ঝুলন্ত এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব প্রতিরোধ
করতে সক্ষম।
দেখা গেছে লাউয়ের রসের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বার্ধক্য ইমিউনস্টিমুলেটারি এর প্রভাব আছে। এটা wbc ও অন্যান্য
প্রতিরোধী সিস্টেম কোষের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে আমাদের শরীরে বহু
শারীরিক সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটায়। এছাড়াও এটি প্যাথোজেনিক মাইক্রোব কোনোভাবে
শরীরে প্রবেশ করতে দেয় না। এটা একটা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে
আমাদের শরীরে কাজ করে এবং স্রেত রক্ত কণিকার ক্ষতি রোধ
করে। এছাড়াও লাউয়ের রসে অন্যান্য এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে
মানসিক চাপ ও ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতিকারক প্রভাব এড়িয়ে নিয়ে শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
এছাড়াও ডায়াবেটিসের আক্রান্ত রোগীদের জন্য লাউ এর রস হতে পারে অন্যতম
একটি ঔষধ। যারা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত এবং যাদের ডায়াবেটিস রোগ হয়
ঢুকে আছে তাদের জন্য নিয়মিত লাউয়ের রস পান করা উপকারী একটি ঔষধ।
প্রিকিনিক্যাল সীমাক্ষায় দেখা গেছে, শর্করার আকস্মিক বৃদ্ধি করে রাখতে এবং
ডায়াবেটিসের কারণে অগ্নাশয়ের যেসব কোষের কার্যপ্রক্রিয়া ক্ষমতা কমে গেছে
তার উন্নতির জন্য লাউয়ের মণ্ড খুবই কার্যকরী হয়ে থাকে।
এছাড়াও আন্ত্রিক সমস্যা সমাধানের জন্য লাভের রস খুব গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। ধরে নেওয়া যায় লাউয়ের রস হজমের পক্ষে লাভদায়ক হয় এবং
কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করে লাউ এর রস। এর কারণ হয়তো হতে পারে যে এটির
মধ্যে সামান্য কিছু পরিমাণে ফাইবার বা তন্তু ও প্রচুর পরিমাণে পানি রয়েছে,
আপনার খাদ্যের সিংহ ভাগই হচ্ছে স্রেত তন্ত্র। পানীয় উপাদান পরিপাক
প্রণালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে থাকে। একযোগে এগুলি পরিপাক প্রক্রিয়া
সাহায্য করে থাকে। পাইলসের জন্য অন্যতম একটি কারণ কোষ্ঠকাঠিন... পেট
পরিষ্কার রাখতে নিশ্চিন্তভাবে লাউয়ের রস পেটের উপর চাপ কমাতে সহযোগিতা করে
এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহযোগিতা করে।
এছাড়াও কার্ডিওভাস কুলার সমস্যা বা ডায়াবেটিসের ফলে হৃদরোগের দেখা দিলে,
সেটা কমাতে লাউ এর রস খুবই উপকারী। এটির কারণে লাউয়ের রস দস্তার উপস্থিতি
যেটা রক্তচাপ এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে।
এছাড়াও যেকোনো ধরনের সংক্রমণ বা আঘাতের বিরুদ্ধে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক
প্রতিক্রিয়া। নিয়মিত বা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কোন শরীরের ভেতরে অসুস্থতার
লক্ষণ হতে পারে। কিছু কিছু সাধারণ প্রদাহ জনিত অসুস্থতার মধ্যে রয়েছে
অথ্যারাইটিস, বাত রিউম্যাটিজম ও পেট ফাঁপা জাতীয় রোগগুলো। ভোলা এবং লাল
হয়ে যাওয়া এবং ব্যথা থেকে এই সব রোগের ইঙ্গিত মিলে এবং এর ফলে খুব অতিষ্ঠ
অস্বাচ্ছন্দ বোধহয়।
ভয়ের কোন কারণ নেই সুসংবাদ হলো, এক ক্লাস লাউয়ের রস খেলে ব্যথা ও প্রদাহ
থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। বিভিন্ন প্রাণীর ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে,
লাউ এর রস খাওয়ানোর ফলে শরীরে ব্যথা এবং প্রদাহ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে
এবং এটা খাওয়ার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি এ জাতীয় সমস্যা
যাদের আছে তারা অবশ্যই নিয়মিত লাউ এর রস খেতে পারেন। লাউ এর রসে প্রদাহ
রোগী এ সকল গুণাবলীর জন্য এর মধ্যে ভিটামিন সি এর মত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর
উপস্থিতি অন্যতম একটি কারণ, যেটা অক্সিডেটিভ চাপ কমিয়ে প্রদাহ থেকে মুক্তি
দিয়ে থাকে।
মূত্রনালীতে সংক্রামণের জন্য লাউ এর রস খুব উপকারী। নিয়মিত লাউয়ের রস
খেলে মূত্রনালীতে সংক্রমণের হার অনেককাংশে কমে আসে। সংখ্যা মন নিয়ন্ত্রণের
জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। লাউ এর রসে ডায়াবেটি ক প্রভাব রয়েছে অর্থাৎ
আমাদের শরীরের কার্যপ্রণালীতে মূত্রের হার বাড়িয়ে দেয়। যেটার ফলে শরীর
থেকে অতিরিক্ত পানি এবং টক্সিন বার হয়ে আসে। এছাড়াও ভিটামিন সি এর মত
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উপস্থিতি থাকার কারণে বিক্ক বা কিডনিতে অক্সিডেটিভ
ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।
এছাড়াও হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য লাউয়ের রস অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে।
লাউ এর রস আমাদের হেড যন্ত্র সুস্থ এবং স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। লাউ
এর রসে যে পরিমাণ দশটা মজুদ রয়েছে তা আমাদের খারাপ কেলোস্টোরল বা LDL
কমিয়ে দিয়ে ভালো কোলেস্টেরল অর্থাৎ HDL এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে
থাকে। এটির অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উপাদান গুলোর সঙ্গে আমাদের ধমনীতে প্রাক
সঞ্চিত হয়ে থাকে তাই যেগুলি বন্ধ না হয়ে যায় সেগুলোতে খেয়াল রাখে।
এছাড়াও লাউ এর রসের অন্যান্য উপকার রয়েছে যেমন,
- বিচে কামড়ালে বিষ তাড়ানোর জন্য লাউয়ের রস কাজ করে থাকে।
- যাদের এজমা, কাশি সহ বক্সিটিসে ভুগছেন তাদের জন্য এটা উপযুক্ত টনিক।
- লাউ গাছের পাতা থেকে যে রস নির্যাস পাওয়া যায় তা জন্ডিস নিরাময় অত্যন্ত সাহায্য করে থাকে।
- আমাদের শরীরের চাপ কমায় এবং শরীরের পানির অভাব দূর করে।
- লাউ এর রসে উপস্থিত থাকা ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি খনিজ পদার্থ আমাদের হার শক্ত করে এবং ভেতর থেকে মজবুত ও শক্তিশালী করে।
- মাইগ্রেন থেকে রক্ষা করে লাউয়ের রস।
- দাঁত ব্যথার সমস্যার জন্য উপযুক্ত প্রতিকার লাউ এর রস।
- ক্রিমের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
- অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়া সমস্যা দূর করতে লাউয়ের রস উপযুক্ত।
তবে লাউ এর রসের এতগুলো উপকারিতা থাকার পরেও এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও
রয়েছে। এটা অনেক সময় বিষাক্ত হয়ে যায় লাউ এর রস স্বাস্থ্যের জন্য
অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যদি লাউ এর রস তেতো
হয়ে যায় তাহলে সেটা পান করলে শরীরের পক্ষে খুব বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া
করতে পারে এবং এটার ফলে মৃত্যু হতে পারে। এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে
পারে যেমন ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, অসাচ্ছন্দ বা অন্য কোন ধরনের সমস্যা
দেখা দিতে পারে, তাই লাউ এর রস খাওয়ার আগে সাধ পরীক্ষা করে নেওয়া
জরুরী।
লাউ চাষ পদ্ধতি
লাউ চাষ পদ্ধতি জেনে রাখা খুব ভালো কেননা শীতকালীন সবজি হিসেবে লাউ খুবই জনপ্রিয়। এবং এটি বাসার আঙিনায় বাসার পাশে বাসার বারান্দায় অথবা ছাদে যে কোন জায়গায় মাটিতে অথবা টবে লাউ চাষ করা যায়। শীতকালীন সবজি হিসেবে লাউকে বিবেচনা করা হলেও বর্তমানে এটি সারা বছর চাষ করা হয়। লাউ এর চাষ সাধারণত শীতকালে বসত বাড়ি আশপাশের করা হয় এবং লাউয়ের পাতা এবং ডগা শাক হিসেবে খাওয়া যায়। শুধু লাভ নয় এটার পাতাতেও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে।
আমাদের দেশে লাউয়ের অনেকগুলো জাত রয়েছে। লাউয়ের আকার আকৃতি এবং গাছের
পাতার ধরন দেখে এর জাতগুলো পার্থক্য করা যায়। আমাদের দেশেও উন্নত কিছু
লাউয়ের জাত দেখা যায়। এইসব জাতের গাছ গাড়ো সবুজ ও হালকা সবুজ হয়ে থাকে।
বাড়ি লাউ-১ এই জাতটি বাছাই এর মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের দিকে সর্বোচ্চ চাষাবাদের
জন্য অনুমোদিত করা হয়। এর পাতা সবুজ ও নরম হয়ে থাকে।
স্ত্রী এবং পুরুষ ফুল যথাক্রমে চারা রোপনের ৪০ থেকে ৪৫ দিন এবং ৬০ থেকে ৬৫
দিনের মধ্যে ফুটে। এটার ফল হালকা সবুজ, লম্বাতে অন্তত ৪০ থেকে ৫০
সেন্টিমিটার। প্রতি ফলের ওজন দেড় থেকে ২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এছাড়াও
এ জাতের লাউ গাছের ১০ থেকে ১২ টি ফল ধরে থাকে। এবং এই জাতটি সারা বছর চাষ
করা যাবে।
এছাড়াও আমাদের দেশের রয়েছে হাইব্রিড লাউ। এটা গোলাকার অথবা লম্বা আকৃতির
হয়ে থাকে। লাউ প্রায় সব ধরনের মাটিতে জন্ম নিতে পারে। তবে দো আঁশ থেকে
এটেল দো আঁশ মাটি লাউ চাষের জন্য অন্যতম। লাউ একটি লতানো উদ্ভিদ যার ফলে
সারা বছর অধিকাংশ সময় যারা লাগে এর ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়।
পলিথিন ব্যাগ চারা লাউ চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। এতে করে বীজের খরচ
কম পড়ে। পলিথিন ব্যাগে চারা উৎপাদন করে রোপন করলে প্রতি হেক্টর প্জুক৯০০
থেকে ১০০০ গ্রাম ব্রিজের প্রয়োজন হয়ে থাকে। এছাড়াও মাটি দিয়ে মাদা তৈরি
করে চারা উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতিটি মাদাই ৫ থেকে ৬ কি করে বীজ রোপন করতে
হবে। চার থেকে পাঁচদিনের বীজ আঙ্কোরিত হবে।
আমাদের দেশে বসত বাড়ির আশেপাশে বাড়ির আঙিনায় ঘরের কিনারায় অথবা
পুকুরপাড়ে কয়েকটা লাউ গাছ লাগানো হয়। তবে বেশি পরিমাণ জমিতে লাউয়ের
চাষ করার জন্য প্রথমে জমিটিতে ভালোভাবে চাষ এবং মই দিয়ে প্রস্তুত করতে
হবে। সঠিকভাবে লাউ চাষের জন্য ২×২ মিটার দূরত্ব করে প্রতি মাদাতে ৫ থেকে ৬
টি করে বিজ বপন করা উচিত। রবি মৌসুমের লাউ মাচাবিহীন অবস্থায় চাষ করা
সম্ভব। তবে মাচার ফলন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হয়।
বীজ বপন করার পরে তারা একটু বড় হলে প্রতি মাথায় দুইটা করে চার রাখতে হবে
এবং বাকিগুলো তুলে ফেলতে হবে। এছাড়াও মাটিতে নিড়ানি দিয়ে আলগা এবং
ধুরধুরা করতে হবে। লাউ গাছের যত্নে নিয়মিত লাউ গাছের গোড়ায় সকাল এবং
সন্ধ্যা বেলা পানি দিতে হবে। যখন গাছ একটু বড় হয় ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার
তখন গাছের গোড়ার পাশে একটি বাঁশ কঞ্চি সহ উত্তেজিত হবে।
লাগানোর পর লক্ষ্য রাখতে হবে এই সবজিতে রেট পাম কিং বিটল পোকার আক্রমণ হতে
পারে। এই পোকাটি দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধরে মেরে ফেলতে হবে তাছাড়া কিছু
প্রজাতির ঘাসের মাধ্যমে লাভের মজা ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই
সেগুলোতে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং নিয়মিত পরিচর্যা করতে হবে। বাড়ি লাউ-১ এর
চারারা রোপনের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে প্রথম ফল সংগ্রহ করা হয়। লাউ ফল
তোলা অথবা সংগ্রহ করা উপযুক্ত পর্যায়ে হলো লাউ হলের গায়ে প্রচুর পরিমাণে
সুং থাকে।
লাউ শাক রান্নার রেসিপি
লাউ শাক রান্নার রেসিপি খুব সোজা হয় এবং আমরা চাইলে যে কেউ লাউ শাক রান্না
করতে পারি, লাউ শাক রান্না অনেক সুস্বাদু হয়ে থাকে এবং তৃপ্তি সহকারে এটা
খাওয়া যায়। আমরা বিভিন্নভাবে বিভিন্ন উপায়ে লাউশাক রান্না করতে পারি আমরা
চাইলে মাছ দিয়ে লাউ শাক রান্না করতে পারি। আবার আমরা চাইলে মাছ ছাড়াও লাউ
শাক রান্না করতে পারি। লাউ শাক রান্নার রেসিপি এবং বিভিন্ন উপকরণ সম্পর্কে
নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
মিষ্টি আলু এবং সরিষা বাটা দিয়ে লাউ শাক রান্না করার পদ্ধতি। আমরা যদি
বৃষ্টি আলু ও সরিষা বাটা দিয়ে লাল শাক রান্না করতে চায় তাহলে লাউ শাক ছোট
ছোট করে কুচি কুচি করে কেটে নিতে হবে। এবং এর সঙ্গে মিষ্টি আলু গোল করে টুকরো
টুকরো করে কেটে নিতে হবে। এর সঙ্গে কড়াইতে তেল গরম করে কালোজিরা শুকনো মরিচ
ফোড়ন দিয়ে আলু ভেজে এবং এর মধ্যে লাউ শাক কুচি দিয়ে ভালোভাবে নেড়েচেড়ে
সিদ্ধ হওয়ার পর সরিষা বাটা দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়াচড়া করে ভাজা ভাজা হলে
নামিয়ে নিতে হবে।
আমরা যদি মিষ্টি আলু এবং সরিষা বাটা দিয়ে লাউ শাক রান্না করতে চায় তাহলে
আমাদের যেগুলো উপকরণ লাগবে।
১ টা গোল আলু
২ টা মিষ্টি আলু
১ আটি লাউ শাক
২ টেবিল চামচ সরিষা বাটা
১ চা চামচ কালো জিরে
৪ টেবিল চামচ তেল
এছাড়াও লবণ, শুকনো মরিচ, কাঁচা মরিচ আপনি আপনার স্বাদ অনুযায়ী দিবেন।
লাউ শাকের পাকোড়া রান্না খুব সহজ এবং খুব সুস্বাদু একটি খাবার। এটা খেতে খুব
সুস্বাদু হওয়ার কারণে যে কেউ এটা খেতে খুব পছন্দ করে। এবং এটি রান্না করা
খুব সহজ চাইলেই আমরা সকলে লাউশাক দিয়ে পকোড়া রান্না করতে পারি। লাউ শাক
দিয়ে পকোড়া রান্না করার পদ্ধতি এবং এর উপকরণগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
লাউ শাকের পকোড়ার জন্য যে সকল উপকরণগুলো প্রয়োজন।
কাঁচা মরিচ কুচি
পিয়াজ কুচি
ময়দা
চালের গুড়া
ধনিয়া পাতা কুচি
জিরা গুড়া এবং আপনার স্বাদমতো লবণ।
লাউ শাকের পকোড়ার জন্য প্রথমত, তেল ছাড়া বাকি সবগুলো উপাদান একটি বাটিতে
নিয়ে ভালো করে মেখে নিতে হবে, দ্বিতীয়ত, চুলায় কড়াই বসিয়ে তেল দিব তেল
গরম হওয়ার পর পকোড়া দিয়ে দিব। এভাবে খুব সহজে পকোড়া রান্না করা যায় এবং
এটি খুব সহজ এবং সুস্বাদু একটি খাবার।
লাউ শাক দিয়ে মসুর ডাল রান্না খুব জনপ্রিয় একটি খাবার এটা অনেক সুস্বাদু
হওয়ার কারণে প্রায় সবাই এটি খেতে খুব বেশি পছন্দ করে থাকে। আমরা যদি লাউ
শাক দিয়ে মসুর ডাল রান্না করতে চায় তাহলে যে সকল উপকরণগুলো প্রয়োজন এবং
লাল শাক দিয়ে মসুর ডাল রান্না করার পদ্ধতি সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা
করা হলো।
আমরা যদি লাউ শাক দিয়ে মসুর ডাল রান্না করতে চাই তাহলে সর্বপ্রথম আমাদের
মসুর ডাল পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে অন্তত ২০ মিনিট। এরপর কড়াইতে দুই টেবিল
চামচ তেল দিয়ে শুকনো মরিচ, তেজপাতা এবং কালোজিরা ফোড়ন দিয়ে ডাল দিতে হবে।
এর মধ্যে স্বাদ অনুযায়ী লবণ, হলুদ এবং দুই কাপ পানি দিয়ে ফুটতে দিতে হবে।
সেগুলো ফুটে ওঠার পর লাউ ডোকা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে অন্তত ১০ মিনিট এবং ডাল
সিদ্ধ হয়ে গেলে, ও লাউ ডগা নরম হলে নামিয়ে নিতে হবে।
লাউ শাক দিয়ে মসুর ডাল রান্না করার উপকরণ গুলো,
১ টি তেজপাতা
২ টি শুকনো মরিচ
৪ টি কাঁচা মরিচ
১ কাপ মসুর ডাল
১ আটি লাউ শাক
১/২ চা চামচ পরিমাণ হলুদ
৩ চামচ তেল এবং স্বাদ অনুযায়ী লবণ
লাউ শাকের উপকারিতা
লাউ শাকের উপকারিতা অনেক বেশি লাউ শাকের উপকারিতার কথা জানলে হয়তো লাউ শাক হয়ে উঠবে আপনার পছন্দের একটি খাবার। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি রয়েছে তাদের মধ্যে ফরজ দ্রব্য হল লাউ শাক। কেননা লাউ শাক বাড়ির বারান্দা থেকে শুরু করে ক্ষেত খামার এবং জমিতে চাষ করা যায় এছাড়াও এটি ঘরের চালে চাষ করা যায় বলে অধিক হারে আমাদের দেশে লাউ শাক দেখা যায়।
লাউ শাক সাধারণত শীতকালীন সবজি হলেও বর্তমানে এটি সারা বছর পাওয়া যায়
আমাদের দেশের কৃষকরা লাউ গাছ সারা বছর চাষ করে থাকেন। তাই হাত বাড়ালে হাতের
নাগালে সব সময় লাল শাক পাওয়া যায়। তবে শীতকালীন সময়ে এটার ফলন ভালো হয়
এবং অধিক হারে কৃষকরা লাভবান হয়। আমাদের মধ্যে লাউ শাক পছন্দ করেনা এরকম
মানুষের সংখ্যা খুব কম। কারণ শীতকালীন সময়ে লাউ শাকের সাধ অনেকাংশ বেড়ে
যায়।
এছাড়াও লাউ শাক ছেলে পাবেন স্বাস্থ্যের নানা রকম উপকার। এখন আমি আপনাদের
জানাবো লাউ শাক খাওয়ার উপকারিতা। চলুন জেনে নি গুষ্টির সমৃদ্ধ ভরা লাউ শাকে
কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে এবং লাউ শাক খাওয়া কি কি উপকারিতা রয়েছে।
লাউ শাকে রয়েছে আইরন, লাউ শাকে আয়রন থাকার কারণে লাউ শাক রক্তে
হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ এবং লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়িয়ে নতুন রক্ত তৈরিতে
সাহায্য করে। এছাড়াও লাউশাকে রয়েছে অধিক পরিমাণে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি।
যা বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ ও ঠান্ডা প্রতিরোধ করতে সহযোগিতা করে থাকে। লাউ
শাকে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে লাউ শাক খুব
কার্য করে ভূমিকা পালন করে এবং পাইলস প্রতিরোধে সহযোগিতা করে।
লাউ শাক খুব সহজ সরল এবং ঠান্ডা প্রকৃতির হওয়ার কারণে এটি মানব শরীরকে
ঠান্ডা রাখে এবং তার সঙ্গে হৃদপিন্ডের অস্থিরতা দূর করে এবং মস্তিষ্ককে
ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এছাড়াও যাদের ঘুমের সমস্যা ঘুমের ঔষধ খেতে হয়
তারা নিয়মিত লাল শাক খেতে পারেন কারণ এটি আপনার শরীর এবং মনকে ঠান্ডা রাখে
এবং মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখে ঘুমের সমস্যা দূর হয়।
এছাড়াও লাউশাকে থাকা বিদ্যমান বিটা ক্যারোটিন, জিয়েজ্যাস্থিনে ও লুটেইন এর
অন্যতম উৎস হলো লাউ শাক। বিটা ক্যারোটিন মানব শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়িয়ে দেয় এবং লুটেইন ও জিয়েজ্যাস্থিন চোখের লালারকম সমস্যা দূর করে এবং
চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা
করে।
এছাড়াও লাউশাকে থাকা বিদ্যুবান ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম হাড় শক্ত ও
মজবুত করে। এছাড়াও এটি বিভিন্ন রকম অসুখ-বিসুখ থেকে রক্ষা করে এবং রোগের
ঝুঁকি কমে আনে। লাউ শাক সম্পূর্ণ কোলেস্টেরল ও ফ্যাট মুক্ত। আবার লাউ শাকে
ক্যালোরি কম থাকায় ওজন কমানোর জন্য লাউ শাক হলো এই আদর্শ খাবার। যারা ডায়েট
করছেন লাউশাক হতে পারে তাদের জন্য কার্যকারী একটি খাবার। এছাড়াও লাউ শাকে
থাকা পটাশিয়াম হৃদ স্পন্দন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহযোগিতা করে থাকে।
লাউ শাকের অপকারিতা
লাউ শাকের অপকারিতা ও রয়েছে, আমরা জানি প্রতিটা উপকারী খাবার অথবা অন্য সবকিছু ক্ষতিকারক দিক রয়েছে কেননা অতিরিক্ত কোন কিছু খাওয়া বা করা শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। ঠিক তেমনি লাউ শাকের কিছু খারাপ বা মন্দ দিক রয়েছে। তাই সঠিক নিয়মে লাউ শাক অথবা লাউ না খেলে এটি আমাদের ক্ষতির কারণও হতে পারে। চলুন জেনে নিয়ে লাউশাক এর অপকারিতা।
অতিরিক্ত পরিমাণে লাউ শাক খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
শুধু যদি কেউ লাউ শাক খায় এবং অন্য কিছু না খায় তাহলে সে ক্ষেত্রে তার
শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে কারণ লাউ শাক সম্পূর্ণ রকম ভাবে সবকিছু পুষ্টির
অভাব পূরণ করতে পারে না। এছাড়াও কিছু ঔষধের সঙ্গে লাউ শাক খেলে এর বিপরীত
পার্শ্ববর্তী ক্রিয়া হতে পারে।
ব্লাড থিনার ঔষধের সঙ্গে ভিটামিন কে সমৃদ্ধ খাবার অধিক পরিমাণে খেলে সমস্যা
দেখা দিতে পারে, তাই স্বাস্থ্যকর ডায়েটের অংশ হিসেবে লাউ শাক খাওয়া খুব
ভালো। তবে অন্য সব গুলোর মত এটি পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত তা না হলে এর
উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আমাদের সকলের
উচিত লাউশাক পরিমাণ মত খাওয়া।
উপসনহারঃ লাউ শাকের ৭ টি উপকারিতা এবং ৬ টি অপকারিতা-লাউ শাকের পুষ্টিগুণ
এই আর্টিকেল টিতে আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি লাল শাকের সাতটির উপকারিতা এবং ছয়টি অপকারিতা আমি আরো জানানোর চেষ্টা করেছি লাল শাকের পুষ্টিগুণ, লাউ শাকের উপকারিতা, লাউ শাকের অপকারিতা, লাউ শাক রান্নার রেসিপি, লাউ চাষ করার পদ্ধতি, লাউ এর রসের উপকারিতা, লাউ শাকের পুষ্টিগুণ এবং লাউ এর উপকারিতা আশা করি লাউ সম্পর্কিত আপনার মনে থাকা সব প্রশ্নের উত্তর আমি দিতে পেরেছি।
প্রিয় পাঠক এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদের সামনে লাল সম্পর্কিত সব কিছু
বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আশা করি আমি আপনাদের লাউ এর উপকারিতা এবং এটি
মানুষের জন্য কতটা কল্যাণকর বুঝাতে পেরেছি। আমাদের সকলের উচিত নিয়মিত
পর্যাপ্ত পরিমাণে লাউ এবং লাউ শাক খাওয়া। প্রিয় পাঠক লেখার মধ্যে অনেক
ভুল্ভ্রান্তি হয়ে থাকে সেসব ভুলভ্রান্তি গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন
এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url